পুরো বিশ্ব যখন করোনা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে, তখন প্রথম সফল ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দাবি করল রাশিয়া। দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গতকাল মঙ্গলবার ভ্যাকসিন আবিষ্কারে সাফল্যের ঘোষণা দেওয়ার পরপরই ২০টি দেশ থেকে ১০০ কোটি ভ্যাকসিনের অর্ডার দিয়ে রেখেছে বলে দাবি করে রাশিয়া।
রাশিয়ায় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরি করছে গ্যামেলিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলজি অ্যান্ড মাইক্রোবায়োলজি।
গতকাল মঙ্গলবার পুতিনের ঘোষণার পরপরই এই ভ্যাকসিনে বিনিয়োগ করা সরকারি সংস্থা রাশিয়ান ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ জানিয়েছেন, গ্যামেলেয়া ইনস্টিটিউটের তৈরি এই ভ্যাকসিন নিয়ে বিশ্বের অনেক দেশই আগ্রহ দেখিয়েছে। এরই মধ্যে ২০টি দেশ থেকে ১০০ কোটির বেশি ডোজের আবেদন জমা পড়েছে।
দিমিত্রিয়েভ বলেন, মোট পাঁচটি দেশে এই ভ্যাকসিন তৈরি হবে। আর সব মিলিয়ে বছরে ৫০ কোটি ডোজ উৎপাদন হবে।
মস্কোর গামালেয়া ইনস্টিটিউটের এই ভ্যাকসিনের নাম গাম-কোভিড-ভ্যাক লিও। তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা না করেই রাশিয়া কীভাবে এই ভ্যাকসিন দেশের জনগণের জন্য উন্মুক্ত করছে, তা নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠেছিল। সেসব প্রশ্নে পানি ঢেলেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন স্বয়ং।
সংবাদ সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়, গতকাল পুতিন ঘোষণা করেন, ‘আজ সকালে পৃথিবীর প্রথম করোনা টিকা রেজিস্টার করল রাশিয়া।’ স্বাস্থ্যমন্ত্রী মিখাইল মুরাস্কোকে তিনি ভ্যাকসিনটির কার্যকারিতা সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ আপডেট দিতে বলেছেন।
একই সঙ্গে পুতিন আত্মবিশ্বাসী, প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে এই ভ্যাকসিনের ক্ষমতা প্রশ্নাতীত। এই ভ্যাকসিন প্রস্তুতের সঙ্গে জড়িত সব কর্মীদেরও ধন্যবাদ জানান পুতিন। পুতিনের বিশ্বাস, খুব শিগগিরই গণহারে এই ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে পারবে রাশিয়া।
রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশ, অন্তত ৬০ শতাংশ নাগরিকের শরীরে করোনা টিকা দিতে হবে। এ বছর অন্তত চার কোটি টিকা বাজারে আনার পরিকল্পনা রাশিয়ার। এই মুহূর্তে রুশ প্রশাসন চাইছে, রিস্ক ওয়ার্কার বলয়ে যারা রয়েছেন অর্থাৎ স্বাস্থ্য ও অন্যান্য জরুরি পরিষেবাকর্মীদের এ মাসেই টিকা দিতে। আগামী অক্টোবর থেকে টিকা দেওয়া হবে গণহারে।
প্রাথমিকভাবে যারা করোনার বিরুদ্ধে সামনের সারি থেকে লড়াই করছেন, তাদের প্রথমে এই ভ্যাকসিন দেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। এদিকে রাশিয়ার এই করোনা ভ্যাকসিন এখনো মানব ট্রায়ালের সব ধাপ ঊত্তীর্ণ হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন পশ্চিমা বিশেষজ্ঞদের অনেকে।